ভারত আগামী মাস অক্টোবর থেকে আবারও টিকা রপ্তানি শুরু করতে যাচ্ছে। রপ্তানির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কার্যক্রমও শুরু করতে যাচ্ছে দেশটি।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মানদাভিয়া আজ সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে, গত এপ্রিলে টিকান রপ্তানি বন্ধ করে দেয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী এ দেশ।
ভারতে হঠাৎ করে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নিজের দেশের জনগণকে আগে টিকার আওতায় আনতে অন্য দেশে টিকা সরবরাহ বা বিনামূল্যে টিকা প্রদান বন্ধ রাখা হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির ৬১ শতাংশ মানুষকে কমপক্ষে টিকার একটি ডোজ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের একদিন আগেই এই ঘোষণা এলো। নিউইয়র্কে কোয়াড সম্মেলনে এ বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার আগেই টিকা রপ্তানি পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দিয়ে মূলত গা বাঁচানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ভারত।
আগামীকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোয়াডভুক্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া টিকা নিয়ে আলোচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেখানে টিকা নিয়ে কোনো ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে চায় না ভারত। সে কারণে আগেভাগেই টিকা রপ্তানির বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মানদাভিয়া এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোকে আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
তবে তিনি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। হুট করেই ভারত যখন টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তারপর থেকেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো, যারা করোনা টিকার জন্য মূলত ভারতের ওপর নির্ভর করে ছিল। নয়াদিল্লির এককভাবে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে টিকাদান কার্যক্রমে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে এসব দেশ।
রপ্তানি বন্ধের আগে বিক্রি, উপহার ও অনুদান মিলিয়ে প্রায় ১০০ দেশে মোট ৬ কোটি ৬০ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে ভারত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালিত টিকা সাপ্লাই ওয়েবসাইটের হিসাব বলছে, দেশটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে মোট এক কোটি তিন লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ লাখ উপহারের এবং বাকি ৭০ লাখ বাংলাদেশের কেনা।
গত বছরের নভেম্বরে সই হওয়া চুক্তি অনুসারে, চলতি বছরের প্রথমভাগে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে মোট তিন কোটি টিকা দেওয়ার কথা ছিল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের।
এর জন্য তাদের আগাম ৬০০ কোটি টাকাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই দফায় কেনা টিকার মাত্র ৭০ লাখ ডোজ দিয়েই পাঠানো বন্ধ করে দেয় সিরাম, এর জন্য ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে তারা।
মন্তব্য করুন