আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রবিবার (২৯ আগস্ট) মেট্রোরেলের ‘ভায়াডাক্টের উপর মেট্রো ট্রেনের প্রথম চলাচল পরীক্ষণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “মেট্রোরেল তরুণ প্রজন্মের ড্রিম প্রজেক্ট। আগামী বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। আগামী বছরের জুনে পদ্মা সেতু প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আগামী বছর চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।”
মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া, মাদারীপুর জেলার শিবচর ও শরীয়তপুর জেলার জাজিরা; তিন জেলার এই তিন অংশবেষ্টিত পদ্মা নদীর পাড়ে পূর্ণদমে চলছে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে পদ্মা সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব (ডেক স্ল্যাব) বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর গত ২০ জুন শেষ হয়েছে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ।
গত ২৩ আগস্ট সড়কপথের শেষ স্ল্যাবটি বসানোর পর পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সেতুর মোট দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের সবকটি বসানো শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আরো একধাপ এগিয়ে গেল। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর মাঝখান দিয়ে গ্যাসলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে শেষ হতে চলছে রেললাইনের কাজও। আগামী বছরের জুনের আগেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা হবে। এ জন্য এ প্রকল্পে কর্মরত সবাই একযোগে দিনরাত কাজ করে চলেছেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পিচঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে আগামী অক্টোবর মাসের শেষ দিকে। এ কাজে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) সেতু বিভাগকে জানিয়েছে, তারা আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই সব কাজ শেষ করবে।
সব মিলিয়ে আগামী মে মাসেই পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব। তবে সেতু বিভাগ জানিয়েছে, দিনক্ষণ ঠিক করা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পর।
২০০১ সালে মাওয়া পুরান ফেরিঘাটে মাছ বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই সেতুর ফলক উন্মোচন করেন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সরকার বদল হলে, থেমে যায় কাজ। আবার ২০০৯ সালে তোড়জোড় শুরু হয় কাজের। অনেক চড়াই উতরাই পার করে অবশেষে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছিল। একইসঙ্গে চলতে থাকে রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোসহ অন্যান্য কাজ। আজ রোডওয়ে স্লাব বসানোর কাজ শেষের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গরূপে পদ্মা সেতু চোখের সামনে শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যেই পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন