মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের জগতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আরো ১৭১ টি ক্লাসরুম । এই সব কয়েকটি ক্লাসরুম চালু হবে দেশের মাদ্রাসা ক্লাসরুম গুলোতে ।
আগামী মার্চে ১৭১ টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম মাদ্রাসা শ্রণীকক্ষে চালু হবে।ইতিমধ্যে দেশের ‘৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের এসব মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শ্রেণি পাঠদান শুরু হবে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের এই প্রকল্পের আওতায় ৪৮২টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়। নতুন করে আরও ১৭১টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হলে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় যুক্ত হবে ৬৫৩টি মাদ্রাসা।
প্রকল্প বিষয় জানতে চাইলে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক তাইমুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে আরও ১৭১টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুর জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। মার্চ থেকে শুরু হবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শ্রেণি পাঠদান।
তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান বাছাই করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হচ্ছে। মাদ্রাসাগুলোতে আধুনিক, প্রযুক্তিবান্ধব ও যুগোপযোগী শিক্ষার ব্যবস্থা নিতে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার।’
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৭ নভেম্বর দেশের ৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন প্রকল্পের ১৭১টি তালিকাভুক্ত মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া স্থাপনের জন্য শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত রাখাসহ নির্ধারিত ছকে তথ্য পাঠাতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন দেশের ৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রকল্প চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৪৮২টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর ১৭১টি মাদ্রাসায় আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলা ছাড়াও বান্দরবান, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, খাগড়াছড়ি, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও রাঙ্গামাটি জেলার ১১১টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হবে। আর রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ৬০টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হবে।
রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের এসব প্রতিষ্ঠানে স্মার্ট টিভি, ডেস্কটপ কম্পিউটার, ইউপিএস, ওয়াইফাই এজি রাউটার, পেন ড্রাইভ ইনস্টলেশনের মাধ্যমে ১৭১টি মাদ্রাসার প্রতিটিতে ৩টি করে ৫১৩টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের কাজ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা আগে দেশের মূল শিক্ষা স্রোতের বাইরে ছিল। এই শিক্ষাব্যবস্থাকে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় আধুনিক মূল শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ছিলেন। বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিখন-শেখানো পদ্ধতির বাস্তব প্রয়োগের জন্য শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের প্রত্যক্ষ প্রয়োগের জন্য প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষাকে প্রয়োগমুখী করে শিক্ষার্থীদের কর্মজীবন নিশ্চিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
মাল্টিমিডিয়া তথা আইসিটিভিত্তিক শিখন-শিখানো পদ্ধতির মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষার্থী গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করার জন্য উদ্দীপনামূলক পদ্ধতির উদ্ভাবন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এছাড়া আইসিটি শিক্ষাকে উন্নত এবং আইসিটি বিষয়ে মাদ্রাসা সেক্টরে সচেতনতা সৃষ্টি ও আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে শিখন-শেখানো কার্যক্রমের উন্নয়ন করা এই প্রকল্পের মূল কাজ।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।
মন্তব্য করুন