করোনার টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সংকট নেই। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ৯৬৯ জন, দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩১৫ জন। টিকার কোন সংকট নেই
গত ১৪ জুলাই থেকে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রয়োগ। তবে ১২ আগস্ট থেকে মডার্নার প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন প্রয়োগ বন্ধ হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ডোজের প্রয়োগ চলবে। আর ১৪ আগস্ট থেকে আবারও দেশ জুড়ে শুরু হবে গণটিকা দান। যেসব স্থানে (টিকাদান কেন্দ্র) টিকার প্রথম ডোজ উদ্বৃত্ত রয়েছে, সেসব স্থানে দ্রুত প্রথম ডোজ সম্পন্ন করে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টিকা উত্পাদনকারী বিশ্বের সব কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে সফল হয়েছে দেশ। এছাড়া যেসব সোর্স থেকে টিকা পাওয়া যায়, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টিকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। টিকা আসছে প্রতি মাসেই। সেই সঙ্গে চলছে টিকাদান কার্যক্রম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, জাতীয় টিকা প্রদান উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব ও করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা ইত্তেফাককে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় দেশে টিকা আসা নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে। প্রভাবশালী দেশগুলো থেকে প্রতি মাসেই আসছে টিকার চালান। এখন থেকে টিকা আসতেই থাকবে। তিনি বলেন, গতকাল পর্যন্ত দেশে ৬৫ লাখ ২৫ হাজার টিকা মজুত আছে। গতকাল সিনোফার্মের ১৭ লাখ টিকা এসেছে। আর আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে আসবে ৩৭ লাখ টিকা। ১২ আগস্ট মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা প্রদান বন্ধ থাকলেও সিনোফার্মের টিকাদান কার্যক্রম চলবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলে সক্ষম করতে চায় বাংলাদেশ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা দান শুরু হলেও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকা সময়মতো না পাওয়ায় তার গতি ব্যাহত হয়। ভারত থেকে টিকা না আসায় চীন থেকে টিকা কিনছে সরকার। পাশাপাশি টিকা সরবরাহের বৈশ্বিক প্ল্যাটফরম কোভ্যাক্স থেকেও টিকা আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে দেশে মডার্না ও সিনোফার্মের পাশাপাশি দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে টিকা আসতে থাকায় বড় পরিসরে ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করে বিরাট জনগোষ্ঠীকে এর আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সারা বিশ্বের টিকা উত্পাদনকারী সব কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অনেকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আমরা বসে নেই। টিকা প্রাপ্তিতে যা যা করার দরকার, সেই কাজে আমরা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছি। টিকা নিয়ে আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা উত্পাদনও শুরু হবে দেশে।
তারা আরো জানান, এখনো বিশ্বের শতাধিক দেশ টিকা পায়নি। আমেরিকা-ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলো টিকা বেশি পেয়েছে। আমরা কম পেয়েছি। টিকা নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি চলছে। তবে এই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন