অ্যাডিলেডের উইকেটে ইংল্যান্ডের মতো ব্যাটিং লাইনআপের সামনে ১৬৮ রান মামুলী টার্গেট! ভারতের দেওয়া এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন দুই ওপেনার জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই ৬৩ রান তুলে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেন দুই ওপেনার। হেলস অধিনায়ক বাটলারের চেয়েও আক্রমণাত্মক ছিলেন। আরশদ্বীপ ও অক্ষর প্যাটেল ছাড়া ভারতের কোন বোলারই ইংলিশ ব্যাটরদের কাছ থেকে সমীহ আদায় করে নিতে পারেননি। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় স্কোরবোর্ডে বোলারদের জন্য এমনিতেই যথেষ্ট রান ছিল না। তার মধ্যে ভুবনেশ্বর, সাসি, অশ্বিন, হার্দিক কেউই উইকেট থেকে সুবিধা আদায় করতে না পারার সুযোগটা নিয়েছেন ইংলিশ দুই ব্যাটার।
শিরোপা প্রত্যাশী ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়ে তৃতীয় বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড। বৃহস্পতিবার অ্যাডিলেডে ইংলিশদের নিখুঁত বোলিংয়ের সামনে ১৬৮ রানে থামে ভারতের স্কোর। জবাবে অ্যাডিলেডের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে কোন উইকেট না হারিয়েই ম্যাচ জিতে নিয়েছে জশ বাটলারের দল। আগামী রবিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড।
সেমিফাইনালে বাবরদের যাওয়া নিশ্চিত হতেই ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল ছিল আলোচনায়। সেই আলোচনা ভালো লাগেনি ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলারের। সংবাদ সম্মেলনেই ঘোষণা দেন ভারত-পাকিস্তানের ফাইনাল তিনি দেখতে চান না। যেই কথা সেই কাজ। বৃহস্পতিবার ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং ভারতকে কোণঠাসা করেই ম্যাচ জিতে ইংলিশরা।
দুই ব্যাটাারের ছন্দময় ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ড ২৪ বল আগেই ১৭০ রানে পৌঁছে গেছে। অধিনায়ক বাটলার ৪৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস খেলেছেন। অন্যদিকে হেলস ৪৭ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় খেলেছেন ৮৬ রানের ইনিংস। ১৬তম ওভারে সামির শেষ বলে লংঅন দিয়ে ছক্কা মেরে ইংল্যান্ডকে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে তোলেন অধিনায়ক বাটলার। ম্যাচের আগের দিন তিনিই হুঙ্কার দিয়েছিলেন পাকিস্তান-ভারতের ফাইনাল দেখতে চান না। বাটলার নিজের কথা রেখেছেন। সামনে থেকে পারফরম্যান্স করে ভারতকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকেও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ভারত। মূলত টস হেরেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে রোহিত শর্মারা। অ্যাডিলেড ওভালে ভারতের শুরুটাও ভালো ছিল না। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ফিরে যান লোকেশ রাহুল। এই ওপেনার ৫ বলে করেন ৫ রান। তবে রোহিত শর্মা ও কোহলি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। রোহিতের ব্যাটে রান আসলেও ব্যাটিংটা ছিল ধীরগতির। ২৮ বলে করেন ২৭ রান।
সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সবচেয়ে সফল ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব। অথচ সেমিফাইনালের মঞ্চে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ১০ বলে ১৪ রান করেছেন। এরপরই শুরু পান্ডিয়ার তাণ্ডব। এই ব্যাটার আক্ষরিক অর্থেই ঝড় তুলেছিলেন অ্যাডিলেডে। কোহলির সঙ্গে মিলে ভারতের স্কোর নিয়ে যান আরও বড় জায়গায়। কোহলি ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৫০ রান করেছেন। তবে পান্ডিয়া ছিলেন আরও ভয়ংকর। ৩৩ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় খেলেন ৬৬ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাতে ভারতের স্কোর যায় ১৬৮ রানে। ঋষভ পান্ত আউট হয়েছেন ৬ রানে। আর রবিচন্দ্রন অশ্বিন অপরাজিত থাকেন শূন্য রানে।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার ক্রিস জর্ডান। এই পেসার ৪ ওভারে ৪৩ রানে দিয়ে নেন ৩ উইকেট। আর একটি করে উইকেট ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদের।
মন্তব্য করুন